কেন বিশ্বকর্মা পুজোর দিন আকাশ ভরে ওঠে রঙিন ঘুড়িতে

0
57

ডেটলাইন বাংলা,১৭ সেপ্টেম্বরঃ আজ বাংলার অন্যতম উৎসব বিশ্বকর্মা পুজো। বিগত কদিন ধরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারনে ঠাকুর তৈরীর ক্ষেত্রে অনেকটাই প্রতিকূলতার মধ্যে পড়েন মৃৎশিল্পীরা। অন্যদিকে আরজি কর কান্ড নিয়েও রাজ্যজুড়ে বিচারের দাবিতে চলছে আন্দোলন। এই আবহেই এবার অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্বকর্মা পুজো। দুর্গাপুর ও আসানসোল শিল্পাঞ্চলে প্রতি বছরের মতো এবছরও বিভিন্ন কলকারখানায় এই পুজোর আয়োজন হয়েছে। তবে,এবারও কি বিশ্বকর্মা পুজোর দিন আকাশ জুড়ে রঙিন ঘুড়ি উড়তে দেখা যাবে ? এসবই নির্ভর করছে মঙ্গলবারের আবহাওয়ার উপর। কিন্তু একটা প্রশ্ন অনেকের মনেই উঁকি দেয় এবং সেটা হল বিশ্বকর্মা পুজোর সঙ্গে ঘুড়ি ওড়ানোর কী সম্পর্ক? এর উত্তর পেতে গেলে ফিরতে হবে পৌরাণিক গল্পে। বিশ্বকর্মা হলেন দেবলোকের কারিগর, বা সহজ কথায় বলতে গেলে দেবতাদের ইঞ্জিনিয়ার। স্বর্গে দেবতাদের যে কোনওরকম কারিগরী সহায়তার দরকার পড়লেই, মুশকিল আসান একমাত্র বিশ্বকর্মা। এই বিশ্বকর্মাই দেবতাদের জন্য উড়ন্ত রথ তৈরি করেছিলেন। শোনা যায়, সেই ঘটনাকে স্মরণ করেই ঘুড়ি ওড়ানো হয় বিশ্বকর্মা পুজোর দিন। যদিও অবিভক্ত বাংলায় অবশ্য ঘুড়ি ওড়ানোর প্রচলন শুরু হয় ১৮৫০ সালে। যদিও সেই সময় সাধারণ মানুষ খুব একটা ঘুড়ি ওড়াতেন না। সেই সময় ঘুড়ি ওড়ানোর রেওয়াজ সীমাবদ্ধ ছিল ধনী ও বিত্তশালী মানুষজনেদের মধ্যেই। কথিত আছে, রাজা মহাতাবচাঁদ নাকি নিজেই ঘুড়ি ওড়াতেন। বর্ধমানের রাজাদের হাত ধরেই নাকি সেখানে ঘুড়ি উৎসব জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং তারপর এই রেওয়াজ ছড়িয়ে পড়ে বাংলার অন্যান্য জায়গায়। ইতিহাসের দিক থেকে জানা যায়, ১৮৫৬ সালে লখনৌ শহরের রাজত্ব খুইয়ে, ইংরেজদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে কলকাতায় এসেছিলেন ওয়াজেদ আলি শাহ। কলকাতার বিচালিঘাটে এসে নামেন তিনি। এর পরে তিনি মেটিয়াব্রুজ এলাকায় গড়ে তোলেন তাঁর নবাববাড়ি। তার সঙ্গে সঙ্গে নবাবি খাবার থেকে, সংস্কৃতি হয়ে বিরিয়ানি, বাইজি, পাখির লড়াই, এমনকি ঘুড়ির লড়াই পাড়ি দিল কলকাতায়। তারপর ধীরে ধীরে প্রথমে কলকাতা তারপর বাংলার অন্যান্য জায়গাতেও ঘুড়ি ওড়ানোর প্রচলন শুরু হয়। এখনও দেখা যায় বিশ্বকর্মা পুজোর দিন বর্ধমান এবং কলকাতায় নানা ধরনের রঙিন আকর্ষণীয় ঘুড়ি আকাশে ওড়ে। পশ্চিমবঙ্গের আরও অনেক জায়গাতেও বিশ্বকর্মা পুজোর দিন ঘুড়ি ওড়ানোর প্রচলন রয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here